Last Update : December 1, 2023
অতিমারী করোনা কোভিড-১৯ প্রবন্ধ রচনা PDF, Best Unique 7 Points
ভূমিকা
‘মন্বন্তরে মরিনি আমরা মারী নিয়ে ঘর করি’—একথা আবারও সত্য হল সাম্প্রতিক অতিমারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে। আমরা যে ধৈর্য, সাহস ও উদ্যম দেখিয়েছি তাতে বিশ্বের মধ্যে আমাদের সেরে ওঠার নিরিখে তথা করোনাকে জয় করার ক্ষেত্রে প্রথম স্থানেই রয়েছি। এর কারণ আমাদের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা। বিশ্বায়ন উত্তরকালে পৃথিবী যখন একটি মাত্র একক, সেখানে এ ধরনের রোগের আক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচাতে গেলে চাই যথাযথ পরিকল্পনা ও জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ সচেতনতা। তাহলেই অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো এইসব অতিমারীর ক্ষেত্রেও আমরা বলতে পারব—’ভারত আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে’।
sahajbanglarachana.com
উৎস
করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি স্থল চিনের উহান প্রদেশ। কোনো কোনো বিজ্ঞানীদের অনুমান ‘প্যাঙ্গোলিন’ নামক প্রাণী বা বাদুড় থেকে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। আবার কারো মতে তা ল্যাবরেটারিতে কৃত্রিমভাবে তৈরি। এ নিয়ে তথ্যানুসন্ধান ও গবেষণা চলতেই থাকবে, আসল কারণ ভবিষ্যৎই বলতে পারে। তবে এই ভাইরাস দু’দিন থেকে চোদ্দ দিন গুপ্তভাবে থেকে মানুষের মধ্যে তা ছড়াতে পারে হাঁচি, কাশি, থুতু, কফ-এর কণার (droplet) মাধ্যমে এবং তাই তা এত সংক্রামক। এই ভাইরাস নাক, সাইনাস বা গলার উপরিভাগে সংক্রমণ ঘটায়।
লক্ষণ
জ্বর, সর্দি, শুকনো কফ, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, জিভে স্বাদ চলে যাওয়া, নাকে গন্ধ না পাওয়া প্রভৃতি করোনা ভাইরাসের প্রাথমিক লক্ষণ। এই ভাইরাস প্রথম প্রাণী থেকে সৃষ্ট হলেও তারপরে তা মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয় ও মানুষের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা সৃষ্টি করে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে চিনের উহান নগরীতে প্রথম তা শনাক্ত করা হয়। পরে “ভাইরাসটি চিনের মূল ভূখণ্ডের অন্যান্য প্রদেশ ও বিমানযাত্রীদের মাধ্যমে থাইল্যান্ড, জাপান, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে। ২০২০-র ৩০শে জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা এই রোগকে কেন্দ্র করে বিশ্ব্যব্যাপী জরুরি সতর্কতা জারি করে।
অতিমারী করোনা কোভিড-১৯ প্রবন্ধ রচনা PDF, Best Unique 7 Points
সংক্রমণ
করোনা ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে প্রধানত দুই ধাপে ছড়াতে পারে। প্রথম পর্যায়ে করোনা ভাইরাস-সংক্রমিত ব্যক্তি ঘরের বাইরে গিয়ে মুখ না ঢেকে হাঁচি, কাশি উন্মুক্ত স্থানে প্রকাশ করলে আশেপাশে ১-২ মিটার পরিধির মধ্যে বাতাসে কয়েক ঘণ্টা ভাসমান থাকতে পারে। দ্বিতীয় পর্যায়ে সেই ভাইরাস কণাযুক্ত বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করলে অন্য ব্যক্তিদের ফুসফুসেও শ্বাসনালি দিয়ে করোনা ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে।
এছাড়া অন্য একটি সংক্রমণের প্রক্রিয়া হল—করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি যদি নিয়মবিধি না মানেন তাহলে তার হাতে বা ব্যবহৃত বস্তুতে ভাইরাস লেগে থাকতে পারে। দ্বিতীয় পর্যায়ে সংক্রমিত ব্যক্তি যদি কোনো বস্তুর পৃষ্ঠতলে স্পর্শ করেন তাহলে পরবর্তী কয়েকদিন সেই ভাইরাস থেকে যেতে পারে। তৃতীয় পর্যায়ে যদি অন্য কোন ব্যক্তি ঐ বস্তুতে হাত দেন তাহলে সে সংক্রমিত হতে পারে। চতুর্থ পর্যায়ে ভাইরাস থাক অবস্থায় হাত দিয়ে যদি কেউ নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করে তাহলে তখনই ভাইরাস দেহের ভিতর প্রবেশ করে গলায় ও ফুসফুসে বংশ বিস্তার করে।
sahajbanglarachana.com
প্রতিরোধ
- প্রথমত, যেহেতু ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয় এবং দু’ সপ্তাহ পর্যন্ত রোগটি অজান্তে থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে তাই শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাটাই এই রোগ প্রতিরোধ থেকে বাঁচবার প্রধান অস্ত্র।
- দ্বিতীয়ত, মুখে ও নাকে মাস্ক পরে অপরের সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা।
- তৃতীয়ত, হাত ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করা এবং হাত স্পর্শ করার ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি থেকে নিজেদের সচেতন রাখা। বাইরে থেকে এসে ব্যবহৃত জামাকাপড় পৃথক জায়গায় রেখে গরম জলে সাবান দিয়ে কেচে ফেলা ও ব্যবহৃত সমগ্র জিনিষগুলি সযত্নে জীবাণুমুক্ত করে ঘরে ঢোকা অত্যন্ত জরুরি।
- চতুর্থত, বহু জনসমাগম-এর স্থান এড়িয়ে যাওয়া, বাইরে গিয়ে একজন থেকে আরেক জনের দূরত্ব বজায় রাখা, হাসপাতালে ও নার্সিং হোমে গেলে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করে আক্রান্ত ব্যক্তির স্পর্শ এড়িয়ে থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।
- পঞ্চমত, হোটেল, রেস্তোরায় গিয়ে খাওয়ার সময়, কিম্বা অফিসে বা কার্যালয়ে গিয়ে জল খাওয়া বা আহার করার সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি নজর দেওয়া দরকার।
- ষষ্ঠত, নিজের চারদিকের পরিবেশ, আবাসস্থল জীবাণুমুক্ত রাখা, যাঁরা মাস্ক ব্যবহার করেন না, তাদের বোঝানো দরকার ‘নিজের নাক কেটে তিনি যেন অপরের যাত্রাভঙ্গ না করেন। কারণ সামাজিক সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে নিজেকে যেমন সচেতন হতে হবে অপরকেও সচেতন করতে সচেষ্ট হতে হবে।
- সপ্তমত, যে ব্যক্তির জ্বর, সর্দি, কাশি ও হাঁচি হচ্ছে তার থেকে ন্যূনতম ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, যত্রতত্র থুতু ফেলা যাবে না, মাস্ক মুখে না দিয়ে চেঁচিয়ে কথা বলা যাবে না, খালি হাত দিয়ে হাঁচি কাশি ঢাকা যাবে না, প্রতিবেশি বা স্বজনের মধ্যে ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা অ্যাপ-এ সংবাদ দিতে হবে ও আক্রান্ত ব্যক্তি ও ব্যক্তির সঙ্গে থাকা সমস্ত মানুষদের বিচ্ছিন্ন করতে হবে অন্তত চোদ্দ দিন। সন্দেহ হলে পরীক্ষা করা ও ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- অষ্টমত, ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে যুক্ত যাঁরা রয়েছেন তাঁদের চরম সাবধানতা গ্রহণ করতে হবে নিজের ও সমাজের স্বার্থে। সর্বোপরি যে কোন অতিমারী প্রতিরোধ সম্ভব সামগ্রিক সচেতনতার মাধ্যমে।
অতিমারী করোনা কোভিড-১৯ প্রবন্ধ রচনা PDF, Best Unique 7 Points
টীকাকরণ
আক্রান্তের নিরিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ( ৯৪ লক্ষ)র পরেই ভারত (৮১ লক্ষ)। তবে মৃত্যুর হারে ভারত তৃতীয় (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২.৩৬ লক্ষ, ব্রাজিল ১.৫৯ লক্ষ ও ভারত ১.২২ লক্ষ)। বসন্ত রোগ যেমন টীকা প্রয়োগ করে প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে তেমনি করোনা ভাইরাসও টীকা (vaccine) প্রয়োগ করে প্রতিরোধ করা সম্ভব। ইতিমধ্যে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, রাশিয়া ভ্যাকসিন-এর বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছে, ভারতের বিজ্ঞানীরাও পিছিয়ে নেই। মানবশরীরে শীঘ্র টীকা প্রয়োগে সুফল পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।
sahajbanglarachana.com
উপসংহার
স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি করে, উপযুক্ত পরিচালন ব্যবস্থার মাধ্যমে, টেস্টের সংখ্যা বাড়িয়ে, সুদূরপ্রসারী প্রচার করে, লকডাউন এর সুফল গ্রহণ করে ও সর্বোপরি স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশকর্মীদের সেবামূলক মানসিকতায় এই ভাইরাসকে প্রতিহত যায়, তাতে সন্দেহের অবকাশ থাকে না।
অতিমারী করোনা কোভিড-১৯ প্রবন্ধ রচনা PDF, রচনাটি সম্পর্কে মতামত জানাতে ভুলো না কিন্তু। নিজেরা নিজেদের মতো তথ্য সংযোজন বিয়োজন করে প্রবন্ধটিকে সমৃদ্ধ করে নিতে পারো।
সাম্প্রতিক বিষয়ের অন্য রচনা দেখতে ক্লিক কর
Are you Indian
Hmm
Hmm
Are you Indian
হ্যাঁ।
But why
How! is not good?
Thank you so much
ধন্যবাদ