Menu

বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ pdf | Best 5 Unique Points


Last Update : July 21, 2023

বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ” বিষয়ক প্রবন্ধটি আসলে “বিজ্ঞানের ভালোমন্দ” বিষয়ক। আধুনিক জীবনের বিজ্ঞানের ভালো দিক কিংবা মন্দ দিকের বিশ্লেষণাত্মক রচনা এখানে লেখা দরকার


বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ

বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ
বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ

সূচনা

বিজ্ঞান কি সকলের জন্য? বিজ্ঞান কি মানুষকে সার্বিক মুক্তির পথ দেখাতে পেরেছে? তা কি মানুষকে কৃত্রিম করে দিচ্ছে না? এ সব প্রশ্ন বর্তমানে প্রতিভাত হচ্ছে। কেননা বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ধনী হচ্ছে আর ধনী। শিল্পাঞ্চলে তৈরি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, মানুষ হয়ে যাচ্ছে যন্ত্র। গান্ধীজি বলেছিলেন –“যন্ত্র পাপ’। কিন্তু রবীন্দ্রনাদের মতে– যত্ন যদি মানব কল্যাণে নিয়োজিত হয় তবে তা পাপ নয়। তবে বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে যেভাবে দেশে দেশে পরমাণু শক্তি ও যুদ্ধাস্ত্র তৈরি হচ্ছে, তার ক্ষতিকর দিকগুলিকে আমাদের ভাবতে হবে।

মনে রাখতে হবে, পরমাণু শক্তি দিয়ে আর যেন হিরোসিমা-নাগাসাকি তৈরি না হয়। পরমাণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশে দেশে যেন হিংসাত্মক কাজ করে সন্ত্রাসবাদ না ছড়ানো হয়। বিজ্ঞানের শক্তিতে মানুষ যেন বলদর্পী ও রণোন্মত্ত না হয়। বিজ্ঞানকে স্বার্থসিন্ধির কাছে লাগাতে গিয়ে অনেকেই আজ যান্ত্রিক হয়ে উঠেছে। দেখা দিচ্ছে অবিশ্বাস, হিংসা আর পরশ্রীকাতরতা। মনে রাখতে হবে, বিজ্ঞানের শক্তি ততটাই যতটা সে কল্যাণমুখী।

অনলাইনে প্রবন্ধ পত্র প্রতিবেদন রচনা

প্রগতির ক্ষেত্রে বিজ্ঞান

আগুন জ্বালাবার মধ্য দিয়েই বিজ্ঞানের যাত্রার সূচনা। এরপর বিজ্ঞান সৃষ্টি করে চলেছে একের পর এক বিস্ময়। দেশের প্রগতির স্বার্থে যখন যা প্রয়োজন তখনই সৃষ্টি হয়েছে বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার। বিজ্ঞানের জন্যই তৈরি হয়েছে ছাপার মেশিন। এই ছাপা বই আমাদের শিক্ষার কাজে প্রধান অবলম্বন। উচ্চতর শিক্ষার জন্য বিজ্ঞানের তৈরি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ল্যাবরেটরীর শিক্ষার্থীদের এক স্থিতিদায়ক জায়গায় নিয়ে গেছে। অন্ধদের জন্য বিজ্ঞান বসে থাকেনি। তারা যাতে শিক্ষিত হতে পারে তারই জন্য ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী স্ট্র্যাসম্যান আবিষ্কার করেন ব্রেইল পদ্ধতি। তাছাড়া মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার, হূৎপিণ্ড পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানের যাদুকরী অবদানের কথা অস্বীকার করা যায় না।

আরো পড়ুন-  দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান PDF | Best 9 Unique Points

কৃত্রিম উপগ্রহ প্রভৃতির মাধ্যমে দূর-দূরান্তের বিভিন্ন খবরা খবরও জানতে পারি। এই সমস্ত উপগ্রহের দ্বারা আমরা বাড়িতে বসে খেলাধুলাও দেখি। প্রগতির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের এই সমস্ত অবদান আজও অনস্বীকার্য। অটোমেশন বা স্বশাসিত যত্ন মানুষের প্রতি পরিশ্রমের কাজগুলি করে কষ্ট লাঘব করছে। এতদিন খনির অভ্যন্তরে যে বিপুল খনিজ সুপ্ত ছিল তার ঘুম ভেঙেছে বিজ্ঞানের ছোঁয়ায়। নদীর জলে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করে মানুষ আজ তা বিভিন্ন কাজে প্রয়োগ করেছে। তাই প্রগতির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের জয়যাত্রা অনবদ্য।

সমাজের সর্বত্র বিজ্ঞানের দান

সভ্য সমাজের যে কোন ক্ষেত্রে চোখ মেললেই দেখা যায়, সভ্যতার রঙ্গে রঙে বিজ্ঞানের অবদান। গ্রামের মাঠের মধ্যে দিয়ে পথে চলছে বাস, লরি, ট্যাক্সি, স্কুটার ইত্যাদি। পথের দুপাশে বৃহৎ বৃহৎ অট্টালিকা। বাড়িতে বাড়িতে আলো জ্বলছে, পাখা ঘুরছে। গ্রামের মধ্যেও মিলে তৈরি হচ্ছে কাপড়, কৃষকরা ব্যবহার করছে লাঙলের পরিবর্তে পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টর, ব্যবহার করছে রাসায়নিক সার। বিজ্ঞানকে বাদ দিয়ে গভীর অরণ্য, নির্জন সমুদ্র এবং এমন কি নিস্তব্ধ হিমবাহে পর্যন্ত চলবার জো নেই। কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, যানবাহন, আমোদ-প্রমোদ, খেলাধুলা সব ক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের দান। বিজ্ঞান আজ মানবসভ্যতায় এনেছে যুগান্তর। সভ্যতার ঊষালগ্নে মানুষ ছিল অরণ্যচারী ও গুহাবাসী। কিন্তু সে সময়ে মানুষকে বিরুদ্ধ শক্তির সঙ্গে পদে পদে সংগ্রাম করতে হয়েছে।

কিন্তু বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারে মানবসভ্যতার সুরম্য ইমারত আজ প্রতিষ্ঠিত। তবুও বলব, বিজ্ঞানের উন্নতি সব ক্ষেত্রে মানব কল্যাণে নিয়োজিত হয়নি। বিজ্ঞানের অভিশাপের ফলও তাই যত্রতত্র। তাই এখন প্রয়োজন বিজ্ঞানের কুফলগুলি দূর করে তার সুফলগুলিকে আপামর জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। তৃণমূলস্তরে বিজ্ঞানের সুযোগ-সুবিধাকে পৌঁছে দেওয়া।

অনলাইনে প্রবন্ধ পত্র প্রতিবেদন রচনা

শান্তির ক্ষেত্রে বিজ্ঞান

বিজ্ঞান তার বহুল আবিষ্কারের মধ্যে দিয়ে মানবজীবনকে দান করেছে প্রশান্তি। কিন্তু বর্তমান সভ্যতায় বিজ্ঞানের আবিষ্কার ভয়ানক মারণাস্ত্র। যা নিমেষে ধ্বংস করে দিতে পারে কত অমূল্য তাজা জীবন। বিজ্ঞান তৈরি করেছে পরমাণু বোমা, রাসায়নিক বোমা—যা যুদ্ধপ্রিয় দেশগুলি নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে এবং পৃথিবী থেকে শাস্তির নিশান মুছতে চাইছে। কিন্তু চুলচেরা বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিজ্ঞানীরা ঐ সমস্ত পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্র আবিষ্কার করলেও প্রকৃত দায়ী কিন্তু প্রয়োগকর্তারাই। পরমাণু বোমার ধ্বংসাত্মক রূপ আমরা জানতে পারি হিরোসিমা ও নাগাসাকি থেকে আজও যেখানে বিকলালা শিশুর জন্ম হয়। তাই মারণাস্ত্র আবিষ্কার বন্ধ করে বিজ্ঞান আজ পৃথিবীর বুকে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হয়েছে।

আরো পড়ুন-  বিজ্ঞান ও কুসংস্কার pdf

শেষকথা

বিজ্ঞানের সুফল যেমন আছে, তেমনি আছে কুফল। সব জিনিসেরই ভালো-মন্দ থাকবে। তা বলে বিজ্ঞানবিদ্যাকে দায়ী করতে পারি না তার কুফলের জন্য। লোভ ও বিকৃতি থেকে মুক্তি পেতে হলে সহজ সুখের ও সরল সৌন্দর্যের দ্বারস্থ হতে হবে। জীবনের মানুষকে উপেক্ষা করে প্রেম ভালবাসাকে বাদ দিয়ে যে শক্তি সাধনা তা প্রাণহীন ও যান্ত্রিক হতে বাধ্য। শক্তির কাছে যদি প্রাণের মানুষ নির্বাসিত হয়, গলদ যদি আনন্দের চেয়ে বেশি মূল্যবান হয় এবং প্রতাপ যদি প্রেমের উপর আধিপত্য বিস্তার করে, তবে যন্ত্রসভ্যতার ব্যর্থতা অবধারিত।


বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ--এই বিতর্কের অবসান নেই। সময় যত এদিয়ে যাবে, আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে সমাজ কল্যাণের নিরিখেই বদলে নেব। তোমরা নিজেরা নিজেদের মননবোধে রচনাটিকে সাজিয়ে নিও।

“বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ” অনুসরণে লেখা যায় ।

* বিজ্ঞানের ভালোমন্দ ** বিজ্ঞানের শক্তি ততটাই যতটা সে কল্যাণমুখী *

অনলাইনে প্রবন্ধ পত্র প্রতিবেদন রচনা


Comments 2

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!